আর নির্বাচন আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জবি আইনে ছাত্রসংসদ বিধান যোগ করার উদ্যোগও নেয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এরই ফলশ্রুতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলাও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচন (জকসু) আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রসংসদের বিধান পাস করে তা একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই অনুমোদনের জন্য পাঠানোর দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন শুরু হলে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ ডাকসুর নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হলে তা পর্যবেক্ষণ করে তারাও বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে ছাত্রসংসদের আইন পাস করে আইনটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে পাঠাবে।
এছাড়া বিশেষ অনুমোদন নিয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করার উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানায় কর্তৃপক্ষ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, যেহেতু অনেক বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলাতে কোনো সংসদ ছিল না। আর নির্বাচনের যে প্রথা তা অনেক বিস্তৃত। তাই আমরা দেখতে চাচ্ছি ডাকসু নির্বাচনটা কেমন হয়, কি ধরনের সমস্যা হয়; সবকিছু বুঝে শুনে আমরাও ডাকসুর আদলেই একটা ছাত্রসংসদ নীতিমালা করব।
২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৮ বছর জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়নি। পরে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হওয়ার সময়ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এ ছাত্রসংসদের অধ্যাদেশযুক্ত হয়নি। এ কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্রসংসদ অধ্যাপদেশ যুক্ত ও নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হোক। ছাত্রসংসদ থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্রদের কথা বলার একটা জায়গা থাকে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্রসংসদ অধ্যাদেশটি যুক্ত করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাবো।
তিনি বলেন, ছাত্রসংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল ছাত্রসংগঠন অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্রসংগঠন শিবিরের অংশগ্রহণ মানা হবে না।
জবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ছাত্রসংসদ নির্বাচন হোক এটা আমরা চাই। কিন্তু সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারি দল যে কারচুপি করেছে তাতে ছাত্রসংসদ নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে তাতে আমরা সন্দিহান। আর সবচেয়ে বড় কথা ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহ-অবস্থান নিশ্চিত জরুরি। ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহ-অবস্থান না থাকলে নির্বাচন আয়োজন করা অনর্থক। তাই আগে ক্যাম্পাসে সব ছাত্রসংগঠনের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। তারপর ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের সাথে আলোচনা হতে পারে।
জবি শাখা ছাত্রফন্টের সভাপতি এম এম মুজাহিদ অনিক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে ১৪ বার জগন্নাথ কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের পরে দীর্ঘ ১৮ বছর নির্বাচন হয়নি। আর ২০০৫ সালে কলেজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তরিত হলেও জবি আইনে ছাত্রসংসদের বিধান সংযোজন হয়নি। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরুর সাথে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তাই আমাদের দাবি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রসংসদের বিধান পাস করে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই অনুমোদনের জন্য তা প্রেরণ করবে।